কী হয়েছে বার্সেলোনার?

হঠাৎ করেই যেন অভিশাপ লেগেছে বার্সেলোনার ওপর। যে দলটা টানা ৩৯ ম্যাচ অপরাজিত থেকে ছুটছিল, তারাই হঠাৎ করে যেন খেলা ভুলে গেছে। রিয়াল মাদ্রিদের কাছে এল ক্লাসিকোতে হার দিয়ে শুরু। এরপর সোসিয়েদাদের পর আজ আবার ভ্যালেন্সিয়ার কাছে হার। তাও আবার নিজেদের মাঠে ন্যু ক্যাম্পে ২-১ গোলে। লা লিগার শিরোপা লড়াই এখন উন্মুক্ত। কিন্তু সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, বার্সেলোনার কী হয়েছে?

পরিসংখ্যানের হিসেবে বার্সেলোনার এরকম খারাপ সময় অনেক দিন আসেনি। ২০০৩ সালের পর এই প্রথম নিজেদের মাঠে টানা দুই ম্যাচ হারল বার্সা। কিন্তু সেটার কারণ কী ?

রক্ষণে দুর্বলতা ?
এই মুহূর্তে বার্সার সবচেয়ে মাথাব্যথার নাম রক্ষণ। পিকে, মাসচেরানো, সার্জি রবার্তো ও জর্দি আলবাদের রক্ষণকে ভ্যালেন্সিয়া ভালোই ভুগিয়েছে। বিশেষ করে প্রতি আক্রমণে পিকেদের একেবারেই ছন্নছাড়া মনে হচ্ছিল। এ নিয়ে গত ১৬ ম্যাচের মাত্র ৩টিতে ক্লিন শিট রাখতে পেরেছে বার্সা, গোল খেয়েছে সর্বশেষ চার ম্যাচেই। এর মধ্যে চ্যাম্পিয়নস লিগে হারের পর রসিকতা করে ভিডিও পোস্ট করে ফেঁসে গেছেন দানি আলভেস। আজ তাঁকে বসিয়ে রাইট ব্যাকে খেলান হয়েছে সার্জি রবার্তোকে। ধারণা করা হচ্ছে, আলভেসকে শাস্তি হিসেবেই বেঞ্চে বসিয়ে রাখা হয়েছে। পিকে, মাসচেরানোর মধ্যেও যেন ঠিক সমঝোতা হচ্ছে না। রাইট ব্যাক ছাড়া রক্ষণের অন্য জায়গায় নির্ভর করার মতো বিকল্পও নেই। সব মিলে হঠাৎ করেই যেন ঘর সামলাতে ভুলে গেছে বার্সেলোনা।


প্রহেলিকার নাম মেসি
৫০০তম গোলের জন্য যে অপেক্ষা ছিল, সেটা ভ্যালেন্সিয়ার সঙ্গে ম্যাচে এসে ঘুচেছে। কিন্তু সেই অপেক্ষা শেষের পরও যে মেসিকে নিয়ে সংশয় থেকে যাচ্ছে। গত কিছুদিনে গোল করতে যেন ভুলেই গেছেন। গত ছয় ম্যাচে মেসির গোল মাত্র একটি, কোনো অ্যাসিস্টও নেই। আজকেও মেসি যেসব সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি, অন্য যে কোনো দিন নিশ্চিতভাবেই তার অর্ধেকও গোল বানিয়ে ফেলতেন। তাহলে কি মৌসুম শেষের ক্লান্তি জেঁকে ধরেছে মেসিকে?

নেইমার-সুয়ারেজও যখন ধাঁধাঁ
এই মৌসুমে মেসিকে ছাড়াই তো একটা সময় দাপটের সঙ্গে খেলেছে বার্সা। সামনে থেকে পথ দেখিয়েছেন নেইমার-সুয়ারেজ। কিন্তু দুজনেই হঠাৎ করে যেন গোল করতে ভুলে গেছেন। ভ্যালেন্সিয়ার সঙ্গে নেইমার তো রীতিমতো হতাশা উপহার দিয়েছেন। বেশ কয়েকটি ভুল পাস দিয়েছেন, আজ তাঁর পাস অ্যাকুরেসি ছিল মাত্র ৬৬ ভাগ। গত চার ম্যাচে ১৫টি টেক অফের মাত্র চারটি কাজে লাগাতে পেরেছেন। সুয়ারেজের অবস্থাও খারাপই। গত তিনটি লিগের ম্যাচে একটি শটও পোস্টে রাখতে পারেননি। আজ যেভাবে সহজ হেডটা ফাঁকায় পেয়েও বাইরে মারলেন, সেটার জন্য পরে নিজেই আফসোস করবেন!  

এবং এনরিকে
প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে এনরিকের রণকৌশল নিয়ে। খেলোয়াড়দের পর্যাপ্ত বিশ্রাম না দেওয়ার কারণেই কি ক্লান্তি জেঁকে ধরেছে তাদের? সোসিয়েদাদের সঙ্গে রাকিতিচ-ইনিয়েস্তাদের বিশ্রাম দিয়ে হার নিয়ে ফিরেছিলেন। কিন্তু ভ্যালেন্সিয়ার সঙ্গে পূর্ণ সদস্যের দল নামিয়েও লাভ হয়নি। মেসিকে কয়েকটা ম্যাচে মাঝে নিয়ে আসার ফাটকাটাও কাজে আসেনি। দল নিয়ে অতিরিক্ত পরীক্ষা নিরীক্ষার মাশুলই কি দিতে হয়েছে এনরিকেকে? আজকের ম্যাচে বদলি হিসেবে কাউকে নামাননি, প্রশ্ন উঠেছে সেটি নিয়েও। 
Recent Posts Widget